খিরা অন্যতম একটি অর্থকরী স্বল্প মেয়াদী ফসল। যার জীবনকাল মাত্র ৬৫-৯০ দিন। কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট, চান্দিনা ও দাউদকান্দি উপজেলার বিস্তৃর্ন এলাকায় এ ফসলটির আবাদ হয়। গত ২/৩ বছর যাবৎ এ অঞ্চলের কৃষকগণ খিরা স্বল্প মেয়াদী লাভজনক ফসল হওয়া সত্তেও আবাদের প্রতি দিন দিন আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। এর অন্যতম প্রধান কারণ বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই ও রোগবালাইয়ের আক্রমন। ডাউনি মিলডিউ খিরার অন্যতম একটি রোগ। এ রোগের কারনে পাতা ঝলসিয়ে যায় এবং গাছ অকালে মরে যায়। ফলে কৃষক অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। খিরার ডাউনি মিলডিউ রোগ দমনের উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে গত দুই বছর যাবৎ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের কীটতত্ত¡ ভিভাগের ‘‘বাংলাদেশ শাক-সবজি, ফল ও পান ফসলের পোকামাকড় ও রোগ বালাই ব্যবস্থাপনায় জৈব বালাইনাশক ভিত্তিক প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণ’’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, কুমিল্লার সহযোগীতায় নাঙ্গলকোট উপজেলার ধাতীশ্বর গ্রামের কৃষক মো. জাহাঙ্গীরের জমিতে পরীক্ষা কার্যটি স্থাপন করা হয়েছে। বিজ্ঞানীদের নিবিড় তত্বাবধানে বিগত দুই বছর যাবৎ প্রচেষ্টার ফলে ডাউনী মিলডিউ রোগ দমনের কার্যকরী একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে। খিরার বীজ রোপনের ৩০-৩৫ দিন অর্থাৎ ফুল আসার পর থেকে ৭-১০ দিন অন্তর অন্তর ৩-৪ বার বায়োড্রামা প্রতি লিটার বা ডায়নামিক ৩ গ্রাম প্রতি লিটার পানির সাথে মিশিয়ে পাতার উল্টা পাশে স্প্রে করলে এ রোগ সহজেই দমন করা সম্ভব। শীতের শেষ দিকে যখন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে তখন এ রোগের আক্রমনের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। ডাউনী মিলডিউ রোগ দমন করার ফলে কৃষকের মাঠে খিরার ফলন প্রায় ১৫-২০% বৃদ্ধি পায়। তাতে কৃষক অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়। জৈব বালাইনাশক ব্যবহারের ফলে পরিবেশের কোন ক্ষতি হয় না স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ এবং রোগ ও পোকামাকড় অনায়সেই দমন করা সম্ভব।